WOW! I didn’t know That: বিভিন্ন দিবস পালনে শিরক-কুফরী-হারম

জাতীয় দিবস পালনে (দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন ও স্যালুট) শিরক কুফরী ও নিষিদ্ধ হারম কিভাবে হয় ব্যাখ্যা



আলহামদুলিল্লাহ ওয়াস্ব সলাতু ওয়াস সালামু আলা রসুলিহীল আমীন। শুধুমাত্র পথপভ্রষ্ট মুসলিমদের নাসীহাত ও যারা দালীলগুলো স্পষ্ট করে জানেন না বা বুঝেন না তাদের জন্য লিখাটি দেয়া হচ্ছে। আল্লাহ একে কবুল করুন এর মাধ্যমে পরিশুদ্ধি দান করুন এবং লিখার ভুল-ত্রুটি গুলো ক্ষমা করে দিন আমীন।

স্বাধীনতা দিবস, ভাষা দিবস, বিজয় দিবস এরকম নানা জাতীয় দিবসগুলোতে মানুষ দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করে, সম্মানে শ্রদ্ধায় দাঁড়িয়ে থাকে, ফুল দেয়, গান গায় এবং নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। কিন্তু ইসলামে এসব পালন করা হারম ও অনেকক্ষেত্রে শিরক-কুফুরী ও জাহেলিয়াত। কিন্তু অনেক জ্ঞানী-শিক্ষিত (দুনিয়াবী দিকে) লোকের কাছে এই বিষয়টি স্পষ্ট না। আসুন দেখি কুরআন ও সহীহ হাদিস কি বলে।


মনে রাখতে হবে, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ
আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সঃ) কোন কাজের আদেশ করলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর ঐ বিষয়ে আপত্তি করার ক্ষমতা নেই। আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়।       (সুরা আহযাবঃ ৩৬)

এবার আসি আসল বিষয়ে,
ঈদ শব্দটি নেয়া হয়েছে মুআওয়াদা শব্দের ( যা বার বার ফিরে আসে) এবং ইতিয়াদ (যে কাজ বারবার করা হয়) একই শব্দমূল হতে। অর্থাৎ আমরা যদি কোন আনন্দ-ফুর্তির বিশেষ ক্ষন বারবার করি অথবা বারবার ঐজন্য একই স্থানে জমায়েত হই তাহলে সেটা এক প্রকার ঈদ। অথচ,
সাহাবী আনাস বিন মালিক (রঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসূলে কারীম সা. যখন মদীনায় আসলেন তখন দেখলেন বছরের দুটি দিনে মদীনাবাসীরা আনন্দ-ফুর্তি করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন এ দিন দুটো কি ? তারা বলল যে আমরা ইসলামপূর্ব মুর্খতার যুগে এ দুদিন আনন্দ-ফুর্তি করতাম। রাসূলুল্লাহ সা. বললেনঃ আল্লাহ তাআলা এ দুদিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটো দিন তোমাদের দিয়েছেন। তা হল ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সাহীহ আবু দাউদঃ ১১৩৪ [http://sunnah.com/abudawud/2])
তাহলে আমরা কিভাবে একাধিক দিবস বানিয়ে নিতে পারি?
আবারো খেয়াল করি, জাহেলিয়াতের যুগে যে দুই দিনে মানুষ আনন্দ ফুর্তি করত তা বাদ দিয়ে আমাদের মুসলিমদের দুইটি নতুন ঈদ দেয়া হয়েছে এর মানে আমরা মুসলিম হয়ে থাকলে অন্য সকল দিবস পালন বাতিল হবে।
এবার আসি আরেক ২ সহীহ হাদিসে,
যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের (যদি কাফির-মুশরিকদের) সাথে মিল বা সাদৃশ্য রাখবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। (আবু দাউদঃ ৪০৩১ [http://sunnah.com/abudawud/34])
এখন প্রশ্ন হল, মুসলিম জাতির মধ্যে কোন বিধানে লিখা আছে, দিবস পালন করতে হবে যেখানে এসব দিবস পালন করে ইয়াহুদী ও খৃষ্টানেরা।
_____________________________________________________________

দ্বিতীয় পর্বে আমরা দেখব কারো সম্মানে দাড়ানো কেন নিষেধ?
রসুল (সঃ) ও তাঁর খলিফা (রঃ) এর আমলে কোন নিয়ম ছিলই না কারো সম্মানে দাড়ানোর বিষয়টি।
কুরআন কি বলে দেখা যাকঃ
.........আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও [সূরা বাক্বরঃ ২৩৮]
শুধুমাত্র আল্লাহর সামনেই সম্মানে দাঁড়ানো যায় এমনকি মালাইকারাও আল্লাহর সামনে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে থাকে।
১. আনাস বিন মালিক (রঃ) বলেন, সাহাবায়ে কিরামের নিকট রাসুলুল্লাহ (সঃ) অপেক্ষা কোন ব্যক্তিই অধিক প্রিয় ছিল না। অথচ তাঁরা যখন তাঁকে দেখিতেন তখন দাঁড়াতেন নাকেননা,তাঁরা জানতেন যে, তিনি ইহা পছন্দ করেন না (সাহীহ তিরমীজিঃ ২৭৫৪ [ http://sunnah.com/tirmidhi/43])
২. মুয়াবিয়াহ (রঃ) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার সম্মুখে অপর লোকদের প্রতি মুর্তির ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকা পছন্দ করে,সে যেন জাহান্নামের মধ্যে তার বাসস্থান বানিয়ে নেয়।
(সাহীহ তিরমীজিঃ ২৭৫৫ [http://sunnah.com/tirmidhi/43])

আর কিছু বলা দরকার পড়ে বলে মনে হয় না, বড় বড় আলেমদের মতে এটা শিরক এর একটা ভিত্তি(দেখুনঃ http://islamqa.info/en/130805) যেখানে রসুল (সঃ) এর সম্মানে দাঁড়ানো যায় না সেখানে জাতীয় সঙ্গীত আর মিনার, মৃত ব্যাক্তির সামনে সম্মানে কিভাবে দাঁড়ানো যায়? আর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া ও বাজানো সেটা যে হারম এটা সবাই জানে।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি এটা গানে গানে না বলে অন্তরে বাস্তবায়ন করে দেখানো উচিত। যে দেশের মানুষ ভাষার জন্য রক্ত দেয় অথচ বর্তমান প্রজম্মরা হিন্দি আর ইংরেজি কার্টুন আর গান ছাড়া কিছুই বুঝে না সে দেশের সমাজের মা-বাবা হিসেবে কতটুকু দেশপ্রেম আমরা দেখাচ্ছি সেটাই ভাববার বিষয়।
ও আর একটা কথাঃ দেশপ্রেম ঈমানের অংগ এটা একটা জাল হাদিস এটা আরবের একটি প্রবাদ ছিল এর কোন ভিত্তিই নাই।
___________________________________________________________________

এবার আসি জাতীয়তাবাদ ইসলামে কেন হারম ?
আসাবিয়াহ আর অর্থ বংশবাদ বা জাতীয়তাবাদ বা গোত্রপ্রীতি ব্যাপারে রসুল (সঃ) সরাসরি বলেছেনঃ
যদি তুমি শুনতে পাও কেউ জাহেলিয়া যুগের (আসাবিয়াহ বা জাতীয়তাবাদ) ডাক দিচ্ছে,তাকে বলো সে যেন তার পিতার জননেন্দ্রীয় কামড়ায়[মুসনাদে আহমাদ হাদিস নং ২১২৩৩]
আবু দাউদে বর্ণিত হাদীসে আল্লাহ্‌র রাসূল (সঃ) বলেন,
সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়াহ দিকে ডাক দেয়, (ন্যাশনালিজম বা জাতিয়তাবাদ) বা আসাবিয়াহর কারণে লড়াই করে কিংবা আসাবিয়াহর কারণে মৃত্যুবরণ করে
একটি বিশদ হাদিসের প্রেক্ষিতে রাসুলুল্লাহ (সঃ) জাতীয়তাবাদ,বর্ণবাদ এবং দেশপ্রেমের সম্পর্কে বলেন,
এগুলো ত্যাগ কর, এগুলো তো পঁচে গেছে
[বুখারীঃ অধ্যায়ঃ ৬৫-৪৯৫৬, তাওহীদ প্রকাশনীঃ ৪৯০৫ (http://sunnah.com/urn/45850)]
আসাবিয়াহ যে ইসলামে বাতিল সেটা প্রমান হয় হাজ্জ এর মাধ্যমে।
এখন প্রশ্ন থাকলো, আমরা নিজেদের মুসলিম উম্মাত দাবি করি, কবরে রাখার আগে দুআ পড়ি যে, অমুক লোক মুহাম্মাদী ত্বরীকার উপরে মারা গেছেন অথচ আমরা জাতীয়তাবাদ নিয়ে লাফাই এটা কি মুসলিম জাতির কাজ নাকি সে রসুল (সঃ) উম্মাহর বহির্ভুত?
_____________________________________________________________

এবার সবচেয়ে জটিল বিষয়ে আসব, শিরক-কুফুরী কিভাবে হয় সেটা দেখার জন্য এর জন্য ছোট ইতিহাস টানা যাক এবং সেটা সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত।

সুরা নূহঃ ২৩-২৪ পড়া যাক এবং সেটার তাফসীর ইবনে কাসীর, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া প্রথম খন্ড (পৃষ্ঠাঃ ২৪৬-২৪৮) এবং বুখারীর ভাষ্য ফাতহুল বারী এর পৃঃ ৬-৭ থেকে যা পাওয়া যায় দেখা যাক

মহান আল্লাহ বলেনঃ
মুশরিকরা বলছেঃ তোমরা তোমাদের উপাস্যদেরকে ত্যাগ করো না এবং ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে। অথচ তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। অতএব আপনি জালেমদের পথভ্রষ্টতাই বাড়িয়ে দিন। (সুরা নুহঃ ২৩-২৪)
ঐ নাম গুলো পুর্বের নেকবান্দাদের নাম যাদের মুর্তি বানিয়ে পুজা করা হতো।
(বিস্তারিত হাদিসঃ সাহীহ বুখারী-তাওহীদ প্রকাশনীঃ ৪৯২০)

আসুন একটি ঘটনার মাধ্যমে জানি কিভাবে মুর্তিপুজার শিরক এসেছে আমাদের এই দুনিয়ায়ঃ
ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে এরা ছিলেন নুহ (আঃ) এর পুর্বের নেকবান্দারা। তাদের সততার জন্য লোকজন তাদের ভালোবাসত। একদিন তারা মারা গেল তাদের কবর দেয়া হলো। সবাই খুব মন খারাপ আর বিষন্ন তাদের হারিয়ে। তাই হঠাৎ ইবলীস (শয়তান) এসে ঐ গোত্রের লোকদের বললঃ তোমরা কি তোমাদের এই নেক বান্দাদের স্মরন করতে চাও না? এক কাজ কর আমি ওদের চেহারার মুর্তি স্মৃতিস্তম্ভে বানিয়ে দেই তোমরা সময়ে সময়ে গিয়ে সেখানে তাদের দেখে আসবে। এরপর সবাই রাজি হল। আবার বছর খানেক পর ঈবলীস এসে কুমন্ত্রনা দিয়ে বললঃ আরে তোমরা এত কষ্ট করে এতদুরে ওদের স্মৃতিস্তম্ভে যাও!! বরং তোমরা তোমাদের ঘরে ওদের মতো মুর্তি তৈরি করে স্মরন করলেই হল। সবাই তো মহাখুশিতে ঘরে ঘরে মুর্তি বানিয়ে সুবিধা মতো করে মৃতদের স্মরন করে। এবার কয়েক প্রজম্ম পর যখন সবাই ভুলে গেল কি কারনে ঐ মুর্তি রাখা হত তাই আবার ইবলীস এসে ঐ লোকদের সন্তানদের কাছে বললঃ হায়! হায়! তোমরা কি কর! তোমাদের মা-বাবা, পুর্বপুরুষরা তো এদের কাছে রিযিক চাইতো আর ওদের কাছে মাথা নোয়াতো (সিজদাহ)। তখন ঐ জাহেল লোকেরা শায়তান এর ধোকায় পড়ে ঐ নেকবান্দা দের পুজা করা শুরু করল। আল্লাহ তাআলা তাঁর রসুল নুহ(আঃ) কে পাঠালেন।    
এটা ছিল পুর্বের মুর্তি পুজার কাহিনী।

একই কাহিনী তো আমাদের সমাজেই আছে!! ওলী আউলিয়া মারা গেলেও মাজার করে শিন্নি-দরগাহ পুজা শুরু হয় আর,
ভাষার জন্য শহীদ (!) হয়ে তার জন্য মিনার বানানো হয় সম্মানে সেখানে দাঁড়িয়ে এ প্রজম্ম করে বিনম্র (মানে মাথা নত করে) শ্রদ্ধা। আর বলা হয় অমর একুশে  অথচ সুরা রহমানঃ ২৬ বলা আছে, ভুপৃষ্ঠের সব কিছুই ধ্বংসশীল একমাত্র আল্লাহই হাই অমর, চিরঞ্জীবকিভাবে আমরা আমাদের মুখ দিয়ে এসব ঘেন্নাকর কথা বলি অথচ আমরা দাবি করি মুসলিম?

এরকম মিনার, গনকবর এর প্রাচীর আর প্রতিকৃতি একসমইয়  কয়েক প্রজম্ম পরে আমাদের বংশধরেরাই মুর্তি মনে করে, সৎ মনে করে, বরকাতময় মনে করে পুজা শুরু করে দিবে যেভাবে নুহ (আঃ) এর আমলে শুরু হয়েছিল।



দুটি গুরুত্বপুর্ন কথাঃ
মহান আল্লাহ বলেন, আপনি কি তাদের দেখননি, যারা কিতাবের কিছু অংশ পাওয়ার পরেও প্রতিমা যাদু (জিবত) ও তাগুতের প্রতি ঈমান আনে (সুরা নিসাঃ ৫১-৫২)
রসুল(সঃ) এর হাদিস, আমি আশংকা করছি তোমরা তোমাদের পুর্ববর্তী লোকদের রীতিনীতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে, এমনকি তারা যদি সাপের গর্তে ঢুকে তোমরাও তাতে ঢুকে যাবে। সাহাবা(রঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসুল্লাল্লাহ তারা কি ঈয়াহুদী ও খৃষ্টান? তিনি বললেন, তারা ছাড়া আর কারা?   (বুখারী ও মুসলিম)

 
 

আমাকে একজন বলছিলেন, ঐ আমলে তো লোকেরা মুর্খ ছিল তাই না বুঝে পুজা করত
আমি বলি,  এই আমলে মানুষ জ্ঞানী বলেই তো এসব আর বানাবেই না। কারন ইতিহাস থেকে মানুষ শিক্ষা নেয়। কোনো সুস্থ মানুষ কি চাইবে একই ভুল বার বার হোক? যেহেতু তারা না বুঝে মিনার সম্মান থেকে মুর্তি পুজা করেছে সেখানে আমরা জ্ঞানী হয়ে আরো ভালোভাবে বুঝবো যে এসব জিনিষ বানানোও আসলে মুর্খদের কাজ আর পালন করা আরো বেশি মুর্খতা

সর্বশেষ একটি সাধারন কথা,
হয়ত এসব ব্যাখ্যা বুঝলেও হজম করতে অনেক কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একটু মাথায় রাখবেন,
মারা যাবার পর আল্লাহ যদি আপনাকে আর আমাকে পাশাপাশি রেখে প্রশ্ন করেন,

১. কেন দিবসটা পালন করলা? ২. কেন গান গাওয়ার জন্য দাড়ালা?
৩. কেন মিনার-কবর পাকা করে বানালা? ৪. কেন জাতীয়তাবাদ গ্রহন করলা?
তখন আমি হয়ত আল্লাহকে এতটুকু বলতে পারব যে আমি চেষ্টা করেছি এ থেকে বেচে থাকার অন্তর থেকে ঘৃনা করার আর অন্যকে সঠিক তথ্যটা জানানোর।

কিন্তু আপনার কি উত্তর হবে?

আল্লাহ আমাদের অন্তরের না বুঝার অজুহাত দূর করে হক্ব পথে নির্ভয়ে চলার তাওফীক দিন আমীন।
পুরো লিখাটি পড়তে ডাউনলোড করুনঃ

http://www.mediafire.com/view/lgh7pnhlmwqcc9z/Dibos_palon_O_Darano_teShirk-Kufr-Haram.pdf

নবীনতর পূর্বতন