শবে বরাত - একটি বাতিল সংস্কৃতি ও বিদ'আত

                 ◕•◕শবে বরাত◕•◕
ইসলামী চান্দ্র মাস শাবানের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতটি ভারতীয় উপমহাদেশের শবে বরাত বলে পরিচিত । শব অর্থ রাত্রি আর বারাআত এর অর্থ মুক্তি । শবে বারাআত এর অর্থ মুক্তির রাত্রি । উল্লেখ্য শব ফারসী শব্দ আর বারাআত আরবী শব্দ । অর্ধেক ফারসী আর অর্ধেক আরবী শব্দ সহযোগে কোন আরবী নাম হতে পারে না । আর এ শব্দ সম্পর্কে কোরআন হাদীস থেকে কোন তথ্যও পাওয়া যায় না ।
তবে বিভিন্ন দুর্বল ও জাল হাদীসে শবে বরাতের রাত্রিকে "লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান" এ অর্ধেক শাবানের রাত্রি বলে উল্লেখ করা হয়েছে । এ রাত্রিতে, শবে বরাতের নামে যে সব কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে তার ভিত্তি কোরআন হাদীস থেকে পাওয়া যায় না । এটা ইসলামের সোনালী যুগের ৪শত বছর পর বারমাকা নামক এক শ্রেণীর অগ্নিপুজকদের দ্বারা আবিষ্কৃত । সমাজের মানুষ ধর্মের নামে এই নব আবিষ্কৃত কর্মকাণ্ডের ভিত্তি না জেনেই সমাজে প্রচলিত রীতির সাথে গা ভাসিয়ে চলেছে । কোন ধর্মীয় কাজ যত আকর্ষণীয় ও ব্যাপকভাবে প্রচলতি হোক না কেন যদি সে কাজের সমর্থন কোরআন ও হাদিসে না থাকে তা হলে তা মান্য করা যাবে না । কেননা সেটা বিদআত বলে গন্য হবে । বিদআত প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌র রসুল(সাঃ)যা বলেছেনঃ

মা আয়েশা (রাঃ)হতে বর্ণিত, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃ)বলেনঃ
"যে ব্যক্তি আমাদের শরীয়তের নামে এমন কিছু চালু করলো যা আর মধ্যে নেই তা প্রত্যাখ্যাত।"
[বুখারি,মুসলিম,আলবানী,মিশকাত]

শবে বরাতের ইতিহাসঃ
ইসলামী সন ৪০০ হিজরীর পূর্বে সকল অগ্নিপূজকদের রাজ্য সমূহ মুসলিমদের দখলে এসে যায় । এরই মধ্যে "বারামাকা" নামক এক শ্রেণীর অগ্নিপুজক প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহন করে কিন্তু সত্যিকার অর্থে মনেপ্রানে তারা অগ্নিপূজকই থেকে যায় । তাই তারা মুসলিমদের ছদ্মাবরনে অগ্নিপুজার এক নতুন পন্থা হিসেবে উদ্ভাবন করে শবে বরাত নামক বিদআতটি । সলাতুর রাগায়েব নামে চালু করে একটি সলাত(নামায) । এই সলাত(নামায) ১০০ রাকাত । এটাই শবে বরাত এর সলাত(নামায) বলে খ্যাত । তারা এ সলাতের জন্য জাঁকজমকের সাথে মুসলিমদের লেবাসে মসজিদে হাজির হত, সাধারন মুসলিমদের মত সলাত(নামায) পড়তো কিন্তু উদ্দেশ্য ছিল অগ্নিপুজা । এরা শবে বরাতে এই সলাতের জন্য ভিতরে ও বাইরে অসংখ্য আলো জ্বালাতো, সম্পূর্ণ মাসজিদকে আলো ডুবিয়ে রেখে অগ্নিমন্দিরে পরিনত করতো । এভাবে গোটা মসজিদকে সাজিয়ে যখন সলাত আদায় করতো তখন তাদের চারদিকেই থাকত আগুন । এই সলাত পড়ার উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি নয় বরং আগুন পূজা ও আগুনকে সেজদাহ করা । বারামাকা নামক সেই মুসলিম নামধারী ছদ্মবেশী অগ্নিপুজকদের ফাঁদে পা দিয়ে সরলমনা ও অশিক্ষিত মুসলিমরাও মাসজিদে জমা হতো ।

৪৪৮ হিজরীতে বাইতুল মুকাদ্দাসে(মাসজিদুল আকসায়) সর্বপ্রথম শবেবরাতের এই প্রচলন শুরু হয় ।
 তৎকালীন ঈমামগন শবেবরাতের এই রীতি মাসজিদগুলোতে চালু করে । উদ্দেশ্য ছিল মাসজিদে বেশী লোক উপস্থিত করে ইমামের জনপ্রিয়তা অর্জন করা । ঈমামগন তাদের জনপ্রিয়তা প্রমান করার জন্য শবে বরাতের এই রাত্রে মাসজিদে উপস্থিত লোকেদের মাঝে বহু ফযীলতের ওয়াজ ও সলাতের অশেষ নেকী পাওয়ার বানোয়াট বিবরন পেশ করতো । যে ঈমাম শবে বরাত এর যত বেশী বানোয়াট ওয়াজ তাফসীর করতে পারতো সে মসজিদে তত বেশী লোক জমা হত । ঈমামদের এই ভীড় বারানর উদ্দেশ্য ছিল বাদশাহের নিকট তাদের জনপ্রিয়তা প্রমান করা । বাদশাহগন গদির স্বার্থে জনপ্রিয় লোকদের তাদের সাথে রাখতে চাইতো । তাই ঈমামদের মধ্যে জনপ্রিয়তার লড়াইয়ে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানে এই শবে বরাতকে নির্বাচিত করেছিল । জনপ্রিয়তার মাপকাঠীতে ইমামদের মর্যাদা বিচার করতো বাদশাহগন । কারন সে সময় জামাআত সহ সরকারী প্রতিনিধিদের দ্বারা সলাত(নামায) পড়ানো হতো । তাই কোন ইমামের ভক্ত সংখ্যা বেশী তা প্রমান করার জন্য শবে বরাত ছাড়া অন্য কোন ব্যবস্থা ছিল না .

তাই তারা ঐ সকল অগ্নিপুজারুপী সলাতকে লোক জমায়েত করার কাজ কর্মের সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করতো । যার ফলে ব্যাপকভাবে জনসাধারণ জমা হত বাইতুল মুকাদ্দাসে । এই বিদআত ৩৫২ বছর পর্যন্ত চলার পর তা বন্ধ করে দেয়া হয় । বন্ধ হয়ে যায় সিরিয়া মিশর সহ সকল আরব এলাকাতে । কিন্তু ইরানে অজ্ঞাতভাবে চলতে থাকে । সেই ইরান থেকে চলে আসে ভারতীয় উপমহাদেশে । অগ্নিপুজকদের অগ্নিপুজার সলাত গ্রহন করল ভারতের নও মুসলিম তাদের পূর্বপুরুষদের দীপালী পূজার অনুকরনে । ভারতের দীপালী পূজার ভক্তরা দীপালী পূজা ছেড়ে দিয়ে আগুন পূজার উদ্দেশ্যে সৃষ্ট এই শবে বরাতকে মহা ধুমধামে গ্রহন করলো সেই সকল মুসলিম যারা প্রকৃত পক্ষে দীপালী পূজার ভক্ত ছিল । তারা মুসলিম বাদশাহদের নিকট স্বার্থ হাসিলের জন্য মুসলিম হল কিন্তু শবে বরাতের মাধ্যমে আগুন দেবতার পুজাও চালু রাখলো ।
[মিরকাত ২য় খণ্ডের ৩য় অংশ ১৯৭ ও ১৯৮ পৃষ্ঠা]
এভাবেই ভারতীয় উপমহাদেশে এই বিদআতী কর্মকাণ্ড শুরু হয়ে এই পর্যন্ত চলছে । কিন্তু দুর্ভাগ্য ব্যাপক মুসলিম জনগোষ্ঠী এখনো এর উদ্দেশ্য বুঝতে না পেরে এটাকে ধর্মীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস মনে করে এই বিদআতি আমাল করে চলেছে ।

****************************************************
সাধারন অর্থেঃ
বিদআত হল নতুন সৃষ্টি।
শারঈঅর্থেঃ
বিদআত হল নতুন সৃষ্টি। আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভের উদ্দেশে শরীয়তের নামে নতুন কোন প্রথা চালু করা,যা শরীয়তের কোন সহিহ দলীলের উপর নির্ভরশীল নয়।

রসুল(সাঃ)প্রত্যেক বক্তব্যের শুরুতে বলতেনঃ
জেনে রেখ ! সর্বত্তম বানী হল আল্লাহ্‌র কিতাব । সর্বত্তম বিধান হল মুহাম্মাদ (সাঃ) উপস্থাপিত জীবনব্যবস্থা । পক্ষান্তরে নিকৃসট্তম কর্ম হল নবাবিস্ক্রিত মতাদর্শ, আর প্রত্যেক নবাবিস্ক্রিত মতাদর্শই সুস্পট গোমরাহি । আর প্রত্যেক গোমরাহির পরিনাম জাহান্নাম    [মুসলিম]

আল্লাহ্‌র রসুল(সাঃ)বলেনঃ
"আল্লাহ্‌ তাআলা বিদআতি লোকের নেক আমল কবুল করেন না যতক্ষণ না সে ঐ বিদআত কাজ থেকে বিরত থাকে।"  [ তাবরানি (হাসান)]
 

শবে বরাতের নামে যা করা হচ্ছেঃ
---নারী ও পুরুষদের গোসল করা ।
---মাসজিদ আলোক সজ্জায়-সজ্জিত করা ।
---পটকা ফোটানো ।
----আতশবাজি করা ।
----বাড়িঘর, কবরস্থান ও মাসজিদে মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালানো ।
----হালুয়া রুটি খাওয়া ও বিতরন করা ।
----সারা রাত জেগে ১০০ রাকাআত সলাত(নামায) আদায় করা ।
---- মিলাদ পড়া ।
----কোরআন তিলাওয়াত ও খতম পড়ানো ।
---- কবরস্থানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য দুআ করা ।
----এই রাত্রে মৃত ব্যক্তির সাথে সাক্ষাত করতে আসে বলে সারারাত জেগে বসে থাকা ।

ইত্যাদি ।
এগুলো সবই বিদআত অনৈসলামিক রসম রেওয়াজ । তাই এগুলো প্রত্যেক মুসলিমের পরিত্যাগ করা উচিৎ এবং সর্বাবস্থায় হিন্দুয়ানী ও বিজাতীয় রীতি নীতি অনুসরন থেকে বিরত থাকা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব । রসুল(সাঃ)ধর্মীয় ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন বা অতিরঞ্জন করা থেকে সাবধান বা সতর্ক করেছেন এই বলে-

" খবরদার! তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে সীমালঙ্ঘন বা অতিরঞ্জন করা থেকে বিরত থাকবে ! জেনে রাখো , তোমাদের পূর্ববর্তীগণ এই অতিরঞ্জন এর কারনে ধ্বংস হয়ে গেছে।" [মুসনাদ আহমাদ]
আল্লাহ্‌র রসুল(সাঃ)বলেনঃ
"তোমাদের উপর পালনীয় হল আমার সুন্নাত ও আমার খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাত। তোমরা উহা কঠিনভাবে আঁকড়ে ধরো এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরো । ধর্মের নামে নতুন সৃষ্টি হতে সাবধান ! নিশ্চয়ই প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদআত ও প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহি এবং প্রত্যেক গোমরাহির পরিনাম জাহান্নাম ।" [আবু দাউদ,দারেমী,তিরমিযী-(হাসান সহীহ)]
খোলাফায়ে রাশেদিনের সুন্নাত মূলত রাসুল (সাঃ)এর সুন্নাত কারন তাঁরা কখনোই রাসুল (সাঃ)এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অনুমোদনের বাইরে কিছু করতেন না।

শবে বরাতের রাত্রের গুরুত্ব সম্পর্কে ভুল ধারনাঃ
কোরআন মাজীদে যে লায়লাতুম মুবারাকার (মহিমান্বিত রাত্রি) কথার উল্লেখ আছে এ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেছেনঃ
" এটাতো সে রাত যে রাত্রিতে প্রতিটি বিষয়ের বিজ্ঞতাপূর্ণ ও দৃঢ় সিধান্ত আল্লাহ্‌ তাআলার নির্দেশে প্রকাশ করা হয় । [সূরা- দুখান, আয়াত-৪]
এ সম্পর্কে ইকামার মত তাফসীরবিদদের ধারনা এই যে, এই লায়লাতুল মুবারাকা শাবানের মধ্যভাগের রাত্রি । এই রাত্রিতে প্রত্যেক, জাতি ও দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করে আল্লাহ্‌ তায়ালা মালাইকাদের( ফেরেশতাদের) নিকট অর্পণ করেন । অন্যদিকে ইবনু আব্বাস(রাঃ), ইবনু উমার(রাঃ), মুজাহিদ(রাঃ) কাতাদাহ(রাঃ), হাসান বসরী(রাঃ)সহ অন্যান্য তাফসীরবিদ লায়লাতুল মুবারাকা বলতে শবে কদরকে উল্লেখ করেছেন যা রামাযান মাসে আগমন করে (অর্থাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯শে রাতগুলি যে কোন একটি রাত) [ইসলামী বিশ্বকোষ ২৩তম খণ্ড ৪৯ পৃষ্ঠা]
লাইলাতুল বারাআত অর্থাৎ মাগফিরাতের রাত্রি বিশ্ববিখ্যাত তাফসীর ইবনু কাসীরের লেখক হাফেয ইমামুদ্দিন ইবনু কাসীর বরাতের রাত্রে তকদীর বণ্টনের হাদীস উল্লেখের আগে বলেনঃ এই হাদিসটি মুরসাল, এর দ্বারা কোরআনের সিদ্বান্ত পাল্টানো যায় না । সূরা- আদ-দুখানের ৪নং আয়াতে বলা হয়েছেঃ অর্থাৎ ঐ রাত্রে প্রত্যেক বিজ্ঞান্ময় কাজের সিদ্বান্ত নেয়া হয় । সে রাত্রটি হলো বারাকাত সমৃদ্ধ রাত্রি যে রাত্রে কোরআন অবতরন আরম্ভ হয় । এই সম্পর্কে ইবনু কাসীর বলেনঃ
সে রাত্রিটি কদরের রাত্রি । সেটি শবে বরাতের রাত্রি নয় ।

 
আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেনঃ
"আমি বারাকাত সমৃদ্ধ রাত্রিতে কোরআন অবতীর্ণ করেছি ।"
[সুরা-আদ দুখান, আয়াত-৩]
" আমি কদরে মহিমান্বিত রাত্রিতে কোরআন অবতীর্ণ করেছি ।"
[সুরা-কদর, আয়াত-১]
এই কদরের রাত্রিটি যে রামাযান মাসে তার প্রমান পবিত্র কালামে পাক থেকেই পাওয়া যায় । আল্লাহ্‌ সুবাহানাহুয়াতাআলা বলেনঃ
" রামাযান মাসেই আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি ।"
[সুরা-কদর, আয়াত-১৮৫]

উপরোক্ত প্রমান স্পষ্ট হল যে সূরা আদ-দুখানে যে বারকাত সমৃদ্ধ রজনীর কথা বলা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে রামাযান মাসের কদরের রাত্রি । এই কদরের রাত্রিতে কোরআন অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয় এবং নবুওয়াতের দীর্ঘ ২৩ বছরে তা শেষ হয় সুতরাং সে রাত্রটি অবশ্যই বারকাত সমৃদ্ধ লাইলাতুল কদর; আর তা শবে বরাত নয় । ১৫ই শাবানের রাত্রিকে যারা ভাগ্য রজনী বলে আখ্যায়িত করেছেন, তাদের নিকট সহীহ দলীল প্রমান বলতে কিছুই নেই ।
এই রাত্রে কবর জিয়ারতে যাওয়ার কোন নির্দেশ নেই । বাকীউল গরকদ(জান্নাতুল বাকী) কবরস্থানে মৃতদের জন্য দু'আ মাগফিরাত করতে আদিষ্ট হয়ে রসুলুল্লাহ(সাঃ) সেখানে গিয়েছিলেন কারন তা না হলে তিনি অন্যান্য সাহাবাদের এমনকি খাদেমদেরও সঙ্গে নিয়ে যেতেন । আর এভাবে সাহাবায়ি কিরাম এবং রসুল(সাঃ) এর পরিবার পরিজন ঐ রাতে কবরস্থানে দু'আ করার জন্য গিয়েছেন বলেও প্রমান পাওয়া যায় না । রসুল(সাঃ) শবে বরাতে জাগেননি বরং লাইলাতুল কদরে নিজেও জেগেছেন এবং তার পরিবার পরিজনকেও জাগ্রত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন ।

শবে বরাতের গুরুত্ব সম্পর্কে যেসব হাদীস তুলে ধরা হয় সে সব হাদীস এবং এগুলোর ব্যাপারে প্রখ্যাত আলিমগনের মতামত তুলে ধরা হলঃ
১। রসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেছেনঃ

"অর্ধেক শাবানের দিবসে তোমরা সিয়াম(রোযা) পালন করবে এর রাত্রে ইবাদত করবে কারন এ রাত্রে আল্লাহ্‌ সূর্যাস্তের পর থেকেই দুনিয়ার আসমানে অবতীর্ণ করেন আর বলতে থাকেন, আছ কি কোন ক্ষমাপ্রার্থী আস আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেই; আছ কি কোন রিযক অন্বেসঙ্কারী, আস আমি তোমাদের রিযক প্রদান করি । আছ কি এ রকম ফজর পর্যন্ত আরুপ বলতে থাকেন ।[ইবনে মাজাহ]
- এ হাদিসটি অত্যন্ত দুর্বল । আর সুত্রে আবু বকর বিন আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ আবু সামুরাহ করাইশী আমেরী নামক জনৈক রাবী রয়েছেন তাকে মুহাদ্দিসীনে কিরাম হাদীস জালকারী বলে অভিহিত করেছেন । ইমাম যাহাবী মীযানুল এতেদালে বলেছেন- ইমাম বুখারী প্রমুখও একে যঈফ(দুর্বল) বলেছেন । ঈমাম নাসাঈ একে পরিত্যক্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন ।

২।মা আয়িশাহ, মুয়ায বিন জাবাল, উম্মু সালামাহ, আমর বিন আস(রাঃ) প্রমুখ সাহাবাগন কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে অর্ধেক শাবানে আল্লাহ্‌ বান্দাদের প্রতি তার রমমতেরতের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং বনী কলবের বকরীর লোমের পরিমান লোককে ক্ষমা করেন, কিন্তু মুশরিক, অংশীবাদি কাফির, আর হিংসুকদের ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষন না তারা শিরক, কুফর আর হিংসা বিদ্বেষ পরিত্যাগ করে ।" [তিরমিযী ও নাসাঈ]
- এই হাদিসটিও ত্রুটিযুক্ত ও সহীহ নয় । মুহাদ্দিসীন্দের মতে এ সম্পর্কে বর্ণিত সব কয়টি হাদীসই যঈফ(দুর্বল)।
[তাহযীবুত তাহযীব ২য় খণ্ড ১৯৬ পৃষ্ঠা, তিরমিযী ভাষ্য, তুহফাতুল আহওয়াবী ২য় খণ্ড ৫২ পৃষ্ঠা]
এছাড়াও এ সম্পর্কে আরও কতিপয় হাদীস বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু তার মধ্যে একটি হাদীসও সহীহ ও ত্রুটিমুক্ত নয় ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন